Latest News

Powered by Blogger.

Adv

Jiaganj-Azimganj

The most popular and twin town is Jiaganj-Azimganj town under Jiaganj-Azimganj Municipality of Murshidabad district.

Adv

History of Azimganj Town (Azimganj City, Murshidabad)

by Biswajit Das  |  at  12:19

Historical Town Azimganj at a glance. Come and visit

মোগল আমলের মুর্শিদাবাদের পুরোনো নগর গুলির মধ্যে আজিমগঞ্জ ছিল অন্যতম। বহরমপুর থেকে ২০ কিমি উত্তরে ভাগীরথীর পশ্চিম পাড়ে প্রায় ৩১৬ বছর আগে অর্থাৎ ১৭০৩ খ্রীষ্টাব্দে আজিমগঞ্জ নগর গড়ে ওঠে।(সংক্ষিপ্ত)



মোগল আমলে বাংলার সুবাদার ছিলেন সম্রাট ঔরঙ্গজেবের নাতি আজিম-উস-সান । তাঁরই নামানুসারে এই নগরের নাম হয় আজিমগঞ্জ।
আজিমগঞ্জ মূলত সেসময়ে ছিল বহুসংখ্যক ধনশালী জৈন-সম্প্রদায় তথা মারোয়ারীদের বাসস্থান । পাশাপাশি হিন্দু অধ্যুষিতও ছিল। আজিমগঞ্জের জৈনদের পূর্বপুরুষরা আঠারো শতকের দ্বিতীয়ার্ধে রাজস্থানের বিকানীর ও মারোয়াড় প্রদেশ থেকে এখানে আসেন ব্যবসাসূত্রে। মূলত জৈনদেরই প্রচেষ্টায় আজিমগঞ্জ নগর আঠারো ঊনিশ শতকে বাংলার এক‌টি প্রধান বানিজ্য কেন্দ্রে পরিনত হয়। (সংক্ষিপ্ত)
ইতিহাসখ্যাত জগৎ শেঠের (The banker of Nawab) আমন্ত্রণে ১৭৬৫ খ্রীষ্টাব্দে আগ্রার বাসিন্দা খড়গ সিং আজিমগঞ্জে এসে বসতি স্থাপন করেন। তার ৯ বছর পর অর্থাৎ ১৭৭৪ সালে আজিমগঞ্জে আসেন হাজারীমল। ---- এরা আজিমগঞ্জের প্রথমদিকের বাসিন্দা ছিলেন।(সংক্ষিপ্ত)
আজিমগঞ্জে সেসময়ে ধনী ব্যক্তিরা বিশেষ করে ধনবান জৈনরা সবচেয়ে বেশি থাকতেন। ব্রিটিশ শাসন কালে এখান থেকেই সবচেয়ে বেশি 'রায় বাহাদুর' হয়েছিলেন। অন্য কোথাও থেকে এত বেশি 'রায় বাহাদুর' হয় নি। এদেরই একজন রায় ধনপত সিং বাহাদুর ( Banker of Azimganj) ১৮৬৬ খ্রীষ্টাব্দে দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপন করেন বহু অর্থব্যয়ে এবং মুর্শিদাবাদে সর্বপ্রথম ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিজ অর্থব্যয়ে আজিমগঞ্জ থেকে নলহাটি পর্যন্ত রেলপথ স্থাপন করেন ।(সংক্ষিপ্ত)



ইংরেজ আমলে আজিমগঞ্জে জৈনদের এত বিপুল প্রতিপত্তি ছিল যে আজিমগঞ্জকে সিটি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল।(সংক্ষিপ্ত)
আজিমগঞ্জের আনাচে-কানাচে ঘুরলেই দেখতে পাবেন ধনী জৈন মহাজন ব্যবসায়ীদের বিশাল বিশাল অট্টালিকা। বিখ্যাত জৈন পরিবার, সিঙ্ঘী পরিবার, নাহার পরিবার, দূগড় পরিবার, লওলাক্ষা পরিবার, শ্রীমল পরিবার, চুরোরিয়া পরিবার, বাছাওয়াত পরিবার, দুধোরিয়া পরিবার, কোঠারি পরিবার, শেঠিয়া পরিবার, বয়েদ পরিবার, পাটোয়ারি পরিবার অন্যান্য বিখ্যাত মারোয়ারি পরিবারদের বাসগৃহ আজিমগঞ্জে দেখা যায়। এরা ব্যবসা বানিজ্য থেকে শুরু করে জমিদারি তথা সমস্ত প্রশাসনিক ক্ষেত্রে এদের আর্থিক বিনিয়োগ ছিল।(সংক্ষিপ্ত)
আজিমগঞ্জ বেশ কয়েকটি অতি সুন্দর জৈন মন্দির আছে ; যার মধ্যে কয়েকটি মন্দিরের মাথা বহু চূড়াবিশিষ্ট। চিন্তামনি মন্দির, নেমিনাথ জীর মন্দির, শান্তি নাথ জীর মন্দির, সম্ববনাথ জীর মন্দির, সদমপ্রভু মন্দির ইত্যাদি মন্দির আছে। আর আছে রামবাগের দাদাবাড়ি বা দাদাস্থান, এক বিখ্যাত জৈন মন্দির। এছাড়া আছে বিখ্যাত ছোট কুঠি ও বড়ো কুঠি। আছে আজিমগঞ্জ রাজবাড়ী, ধর্মশালা, মার্বেল হাইস, বারোদুয়ারী ইত্যাদি।(সংক্ষিপ্ত)


দেশ স্বাধীন হয়ে যাওয়ার পর অনেক ধনী ও সম্ভ্রান্ত জৈন পরিবার আজিমগঞ্জের মায়া ত্যাগ করে চলে গেছেন ভারতের অন্যান্য শহরে ব্যবসাসূত্রে। ফলে আজিমগঞ্জের গৌরব একটু ম্লান হয়ে গেছে। কিছু জৈন এখনো আছেন আজিমগঞ্জে। তারাই আজিমগঞ্জের জৈনদের ঐতিহাসিক ঐতিহ্যকে টিম টিম করে জ্বালিয়ে রেখে চলেছেন।
জৈনদের উৎসবগুলি মহাসমারোহে পালিত হয়ে থাকে আজিমগঞ্জে। নানান সময়ে নানান জৈন ধর্মগুরুর আগমন ঘটে আজিমগঞ্জে। জৈনদের মহাবীর জয়ন্তীতে স্থানীয় বিদ্যালয়গুলি ছুটি থাকে ।
বর্তমানে আজিমগঞ্জে একটি হাসপাতাল, পোস্ট অফিস, এক‌টি পুলিশ ফাঁড়ি, কেশর কুমারী বালিকা বিদ্যালয় (উ মা), রায় বুধ সিং বাহাদুর উচ্চ বিদ্যালয় (বয়েজ), ডনবস্কো উচ্চ বিদ্যালয় ( কো-এড) এবং দুটি রেল স্টেশন আছে। আজিমগঞ্জের সবজি বাজার বিখ্যাত। এছাড়া মাছের বাজারও বিখ্যাত । এখানকার বাজারের ছানা ও ক্ষীরের সন্দেশ মিষ্টি মিষ্টান্ন বিশেষভাবে বিখ্যাত।(সংক্ষিপ্ত)
আজিমগঞ্জ সংলগ্ন সন্নিহিত অঞ্চলে অনেক প্রাচীন ইতিহাসের ছড়াছড়ি দেখা যায়। বাংলার 'বারানসী' বড়নগর এই আজিমগঞ্জেই। এরপর বিনোদ--একটি প্রাচীন আখড়া, লোহাগঞ্জ--- একটি একটি প্রাচীন আখড়া, দস্তুরহাট---একটি ঐতিহাসিক হাট, গয়সাবাদ--- সুলতানি আমলের নগর, পাল আমলের--- মহীপাল ও সাগরদীঘি, রাজা কুসুমেশ্বরের কুসুমখোলা, রাজা বেণীমাধবের বেণীপুর, বাংলার জগৎশেঠদের শেঠেরলহর ও একান্ন পীঠের অন্যতম পীঠ কিরিটেশ্বরী, নবাব সিরাজদ্দৌলা'র হীরাঝিল, প্রাচীন লুপ্তপ্রায় ঐতিহাসিক নদী ঝুমকা ---আজিমগঞ্জে এলেই দেখতে পাবেন। প্রাচীন ইতিহাসের আবছা ছবি মানসলোকে দেখতে অবলোকন করতে পারবেন। এখানকার ইতিহাস অতি প্রাচীন ইতিহাস ---- এনিয়ে নিরন্তর গবেষণা চলছে। ( সংক্ষিপ্ত)
যাত্রাপথঃ-----
হাওড়া থেকে আজিমগঞ্জগামী যেকোনো ট্রেনে আজিমগঞ্জ জংশনে নেমে আজিমগঞ্জ আসা যায়। আবার শিয়ালদহ থেকে লালগোলাগামী যেকোনো ট্রেনে জিয়াগঞ্জ স্টেশনে নেমে ভাগীরথী পার হয়ে আজিমগঞ্জ আসা যায়।
কলকাতা ধর্মতলা থেকে শিলিগুড়িগামী বাসে বহরমপুরে নেমে ছোট গাড়িতে জিয়াগঞ্জ এসে নদী পার হয়ে আজিমগঞ্জে আসা যায়।
শিলিগুড়ির দিক থেকেও বাস বা ট্রেনে আজিমগঞ্জ আসা যায়।
থাকাঃ --- আজিমগঞ্জে টুরিস্টদের থাকার জন্য হোটেলের সুব্যবস্থা রয়েছে। সুলভ দামে ভালো খাবার পাওয়ার ব্যবস্থা আছে। যার যেমন সাধ্য, তার সেরকম ব্যবস্থা এখানে আছে। অভিজাত হোটেল থেকে শুরু করে সাধারণ হোটেল এখানে আছে। আছে নিরাপত্তা।
পরিবহন ব্যবস্থাঃ----- ঘুরে বেড়ানোর জন্য খুব কম ভাড়ায় ছোট গাড়ির ব্যবস্থা আছে, আছে চার চাকার সুবিধা। আছে নদীবক্ষে নৌকা বা লঞ্চে ভ্রমণের ব্যবস্থা । আছে ভ্রমন গাইডের ব্যবস্থা।

Written by:
আজিমগঞ্জ
মুর্শিদাবাদ

0 comments: